মোহাম্মদ রেদোয়ান :
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার কক্সবাজার সিটি কলেজ। সৌন্দর্যের সবটুকু যেন নিজেই ধারণ করে রেখেছে বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধীন এই কলেজটি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর কলেজটির পুরো ক্যাম্পাস প্রথম দেখাতেই যে কাউকে মুগ্ধ করে দেবে এবং প্রকৃতিকে খুব কাছে থেকে দেখার স্বাদ মিটিয়ে দিবে, বিশুদ্ধ বাতাস শীতল করে দিবে হৃদয়।
এখানকার ছাত্রছাত্রীরা তো বটেই , সাধারণ মানুষের জন্য এ এক প্রাকৃতিক আশ্চর্য। কলেজের পুরো ক্যাম্পাসটাকেই প্রকৃতি এক নিবিড় আলিঙ্গনে জড়িয়ে রেখেছে, যা যে কোন মানুষের দুঃখ কষ্ট অবসাদ নিমেষেই ভুলিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। শিক্ষা গ্রহণের সময় ছাত্রছাত্রীদের কখনো অবসাদ গ্রস্থ হতে দেয় না এই ক্যাম্পাস।
কলেজের চারপাশে সবুজ অরণ্য আর পাহাড় ঘেরা প্রকৃতি যেন তার সৌন্দর্যকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
কলেজের প্রধান গেইট দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই রাস্তার একপাশে কলেজের নূর ভবন ও অন্য পাশে সারি সারি গাছের ফাঁকে কলেজের নয়ানভিরাম দৃশ্যের মাঝে নিজেদেরকে বিলীয়ে দেয় ছাত্রছাত্রীরা।
ক্ষানিকটা সামনে এগিয়ে আসলেই দেখতে পাবেন নান্দনিক কলেজের দ্বিতীয় প্রধান গেইট। যেখানে আছে সিকিউরিটি মামা, এই গেইট পার হতেই দেখতে পাবেন। তবে অনুমতি ছাড়া দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে দেয় না ।
কলেজের মাঠ সবুজের চাদরে বিছিয়ে দিয়ে অপরূপ করে রেখেছে নিজেকে। এটিই ক্যাম্পাসটির সেন্ট্রাল মাঠ। এখানে কলেজের নিজস্ব খেলাধুলার পাশাপাশি আন্তঃ বিভাগীয় বিভিন্ন ইভেন্টগুলো অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এছাড়াও কলেজের বড় বড় আয়োজনগুলো এই মাঠেই হয়ে থাকে। সেন্ট্রাল মাঠের পাশেই শহীদ মিনারের অবস্থান। এর পাশেই ছাত্র-ছাত্রীদের বসার স্থান সেখানে জমে ঝালমুড়ি সহ নানা খাবারের আড্ডা।
কলেজে সারাবছরই বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে রঙিন উৎসবে মেতে থাকে, কখনো বৈশাখ, কখনো শরৎ আবার কখনো বর্ষা। একটি বলয়ের মধ্যে আবর্তিত হতে থাকে ক্যাম্পাসের সাংস্কৃতিক অঙ্গন। শহীদ মিনারের পাশেই অবস্থিত এল সাইজের সবচেয়ে পুরাতন মূল ভবন (বর্তমান বিজ্ঞান ভবন)। তার একটু পশ্চিম পাশে কলা ভবন (সাবেক রিসোর্স ভবন) যেখানে কেটেছে আমার অনার্সের ৪টি বছর! এই ভবনের ছাদে উঠে দেখতে পাবেন অপরূপ কক্সবাজারের সৌন্দর্য। তার পাশাপাশি ভঙ্গুর পাহাড় এই পাহাড়টি কক্সবাজার সিটি কলেজের সৌন্দর্যকে দ্বিগুণ করেছে। দক্ষিণে পাহাড়ের পাশেই অবস্থিত কমার্স ভবন। তার সঙ্গেই কলেজ ক্যান্টিন । কমার্স ভবনের পূর্ব পাশে বাস পার্কিং । এখানেই রাখা হয় কলেজ বাস ও সকল প্রকার গাড়ি। বাস পার্কিং এর পাশে অবস্থিত লাইব্রেরি ভবন।
কক্সবাজার সিটি কলেজ ক্যাম্পাস প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। বর্তমানে এটি দেশের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । শিক্ষাথী প্রায় ১২ হাজার , শিক্ষক ২ শতাধিক , কর্মচারী ৫০ জন।এইচএসসি , বিএ, বিএসএস , ১৫টি অনার্স , ২টি প্রফেশনাল কোর্স , ৬টি মাস্টাস ও থিয়েটার স্টাডিজ বিভাগ ও আছে । ক্যাম্পাসের ছাত্র-ছাত্রীরা সবুজ ছায়ায় ঘেরা পরিবেশে লেখা পড়া করছে। এ কলেজের ছাত্রছাত্রীরা হয়তো প্রাকৃতিক কারণে ক্রিয়েটিভ মাইন্ডের হয়ে থাকে। ক্যাম্পাসের চার পাশে পাহাড়ের ঘেরা যেন সৃষ্টিকর্তার অন্যতম সৃষ্টি । যা মানুষকে মুগ্ধকরে পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ১৯৯৩ সালে তৎকালীন প্রিন্সিপাল জনাব মমতাজুল হক স্যারের হাত ধরে শুরু । পরবর্তীতে সাবেক সংসদ সদস্য ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি জনাবা অধ্যাপিকা এথিন রাখাইন ম্যাডাম এবং বর্তমান প্রিন্সিপাল জনাব ক্য থিং অং স্যারের মাধ্যমে পরিপূর্ণতা পেয়েছে। কলেজের সকল প্রকার উন্নয়নের মহাকারিগর এই ২ মহান ব্যক্তি।
কক্সবাজার ভ্রমণের অন্যতম স্পট হতে পারে প্রকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত কক্সবাজার সিটি কলেজ যা হিমছড়ি, দরিয়া নগর, ইনানী থেকে কোন অংশে কম নয়। অবসরে আপনারা কক্সবাজার সিটি কলেজে ঘুরে আসতে পারেন।
লেখক: মোহাম্মদ রেদোয়ান ,৪র্থ বর্ষ , ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, কক্সবাজার সিটি কলেজ ।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।